সুবির রায় চৌধুরী(সাব্রুম): পবিত্র বিধানসভায় শীতকালীন অধিবেশনে ভুলেভরা তথ্য দিয়ে বিভ্রান্ত করছে বিভিন্ন দপ্তর। গত বৃহস্পতিবার এমনই এক ভুল তথ্যের নিরিখে সাব্রুম জুড়ে চলছে খবর প্রকাশ। প্রশ্নোত্তর পর্বে রাজ্যের তথ্য সংস্কৃতি দপ্তর তথ্য দিয়ে জানিয়েছে সরকার গঠন হওয়ার পর সাব্রুমের বিভাগীয় পূর্ত দপ্তর রূপাইছড়ি ব্লকের অন্তর্বর্তী বিভিন্ন এলাকায় মোট চারটি রাস্তার মেরামত ও নির্মাণ বাবদ ১ কোটি ২২ লক্ষ ৭৬ হাজার টাকা ব্যায় করেছে। এক্ষেত্রে উপরিউক্ত টাকা খরচ করে চারটি রাস্তায় চলাচলের উপযোগী করে তোলা হয়েছে।
এই খবর গতকাল সংবাদ মাধ্যমে প্রচারিত হতেই পুরো সাব্রুম জুড়ে রবিবার শোরগোল ওঠে। সাব্রুম পূর্ত দপ্তরের অধীন রূপাইছড়ি সাব ডিভিশন দপ্তরের উদ্ধৃতি দিয়ে জানিয়েছে, মহকুমার অন্তর্গত বৈষ্ণবপুর থেকে বাঘমারা হয়ে পূর্ব সাব্রুম পর্যন্ত সাড়ে দশ কিমি, গুরুচাঁদ থেকে রূপাইছড়ি পঞ্চাায়েত হয়ে গরিফা অবধি চার কিমি, সিন্দুকপাথর থেকে বৈষ্ণবপুর পর্যন্ত ১৪.৫০ কিমি এবং বন্যায় ক্ষতিগ্রস্থ লুধুয়া রাস্তায় মোট ৪.২০ কিমি রাস্তার নির্মাণ হয়েছে। অথচ বাস্তব কিন্তু অন্য কথা বলছে। বাস্তব সত্য হল, এই চারটি রাস্তার কোনটাই চলাচলের উপযোগী করে তোলা হয়নি। এমনকি রাস্তার খানাখন্দগুলি বিটুমিন আর ইটের সুরকি দিয়ে তড়িঘড়ি ঢেকে দেওয়ার যে অপচেষ্টা করা হয়েছে সেটিও আজ প্রত্যক্ষ তদন্তে বেরিয়ে এসেছে।
দপ্তরের অনেক কর্তাব্যক্তিই প্রকারান্তরে স্বীকার করে নিয়েছে এটি মিথ্যার ঝুলি ছাড়া আর কিছু নয়। বিগত বাম আমলের ইস্যু করা এইসব কাজগুলির ওয়ার্ক অর্ডার খুলে বিভিন্ন ঠিকাদার গোষ্ঠীর নাম নথিভুক্ত করে কোনো এক ক্ষমতাবান কমিশনের অর্থ কামিয়ে বিল পেমেন্ট করার নির্দেশ দিয়েছে। দপ্তর অধিকারিকরাও সবুজ সংকেত পেয়ে বিল পেমেন্ট করে কাজ হয়েছে বলে সায় দিয়ে দিয়েছে।
অথচ আজ বিধানসভায় এই তথ্য প্রকাশ হতেই সাব্রুমে শোরগোল শুরু হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে জনমানুষ আবার বাম আমলের কালো ছায়ার কথা বলতে শুরু করেছে। তখন পার্টিফান্ডে টাকার একমাত্র যোগানের মাধ্যম ছিল এই পূর্ত দপ্তর। দীর্ঘ ২৫ বছরের এই কালো ছায়া আজ আবার প্রতিফলিত হচ্ছে সাব্রুম মহকুমায়। মানুষের দীর্ঘদিনের আশা আকাঙ্খায় গুড়ে বালি ছিটিয়ে মাত্র আট মাসেই আবার পূর্ত দপ্তরের স্বর্গীয় বাপ এর গল্প পবিত্র বিধানসভায় বলাতে এইসব আধিকারিকরা ভয় পায় না। কার অঙ্গুলি হেলনে এইসব চলছে তা মানুষ অচিরেই বের করবে বলে এলাকায় বলাবলি চলছে। শুরুতেই এতবড় লুটের বহর নিয়ে চিন্তিত পরিমিলিত সমাজ।
মহকুমায় পূর্ত ডিভিশনের তিনটি মহকুমা অফিস বিদ্যমান। একা রুপাইছড়ির একটি অংশেই যদি কোটির ওপর লোপাট হয়, তাহলে বাকি পূর্ত মহকুমাগুলিতে লুটের পরিমান যে কি হতে পারে, তা সহজেই অনুমেয়। কাজ না করে টাকা হাতানোর এই খেলা কি আদেও বন্ধ করতে পারবে নতুন সরকার ? তবে বসে নেই ভুক্তভুগি জনগণ। এরা রাস্তা রুখো করে এই কাজের বরাদ্দের টাকার হিসেবে নিতে প্রস্তুত হচ্ছে।