রাজনীতির জটিল অঙ্কে আবারও ধরাশায়ী সাব্রুমের পরিবর্তনপন্থীদের আবেগ

সুবীর রায় চৌধুরী(সাব্রুম): সারা রাজ্যে মহাধুমধামে গণতন্ত্রের উৎসব তথা পুরপরিষদ ও নগর পঞ্চায়েত নির্বাচনী নির্ঘন্টের দামামা বাজলেও সাব্রুমের রাজনীতিতে গেরুয়াকরনের সমাধি চলছে। দুর্জনেরা বলছে চা দোকানেই বামপন্থীদের সাথে নগর নির্বাচনের দফা-রফা সেরে নিয়েছেন সদ্য নির্বাচিত বিধায়ক । লোভীর রাজনীতির প্রেক্ষাপটে নগরে বিরোধীদের থাকার এক অপপ্রয়াস গেরুয়াদের ক্ষমতা উত্তরনের শুরুতেই জারি ছিল। সেই প্রথা নয় মাস ধরে সমানেই চলছে।

গেরুয়া শিবিরের একাংশের অভিযোগ, ক্ষমতা বিকেন্দ্রীকরণ হতে দিতে চায় না মহকুমার জনপ্রতিনিধি। ফলে নগরের রাজনীতির শেষ কথা বলা সাবেক নগরকর্তা আগামী তিন বছরেও ক্ষমতার মসনদে বসতে পারবে না, এই বিষয়টি এক রকম পাকা হয়ে গেছে। কিন্তু ক্ষমতার এই লোভীর রাজনীতিতে ক্ষতিগ্রন্ত হলেন নগরের প্রায় ৩০০০ আমজনতা যারা দীর্ঘ বাম শাসনেও বঞ্চিত ছিলেন, ক্ষমতা পরিবর্তনের পরেও বঞ্চনার অবস্থানেই রয়ে গেছেন। পরিবর্তনের স্বার্থে নিজেদের ভোটকে সামিল করেও ওরা আজ বিরোধী । নগরের সমস্ত পাওনা গন্ডা এখনো বামপন্থী নেতারাই হিসেব করে থাকেন।

উল্লেখ্য ২০১১ সালে এই মহকুমা তথা সাব্রুম নগর পঞ্চায়েতের ক্ষমতা তৎকালীন বিরোধী কংগ্রেসের হাতে পৰ্যবেসিত করেছিল নগরের জনগন । মাত্র দেড় বছরেই তৎকালীন বামফ্রন্ট সরকার সম্পুর্ন বেআইনি ভাবে ক্ষমতার পালাবদল ঘটিয়ে নগর নিজেদের করায়ত্ত করেছিল। ওই সময়ও বিরোধীরা গনতন্ত্রের সুভাষ নিতে পারেনি আর আজ ক্ষমতায় এসেও পারছে না । বর্তমান নগর সদস্যরাও চেয়েছিলেন ক্ষমতার পরিবর্তনের সাথে সাথে পদত্যাগ করতে । কিন্তু সাব্রুমের এক জনপ্রতিনিধি নতুন সরকারের ভাব-ভঙ্গিমার দোহাই তুলে তাদের পদত্যাগ করতে দেয়নি। আর এই সুযোগকেই কাজে লাগিয়ে বর্তমান বিরোধী দল তথা বামফ্রন্ট। সাব্রুমকেই দল পরিচালনার করিডর হিসেবে গড়ে তুললো।

নির্বাচনের পর দক্ষিন ত্রিপুরায় বামফ্রন্ট সাব্রুমকেই টার্গেট কারে রাজনীতির দামামা শুরু করেছে এটা বাস্তব সত্য। গত কিছুদিন আগে মহকুমার সামসিং স্কুলে এক সরকারী অনুষ্ঠানে নগর পঞ্চায়েতের দুই সদস্যকে মঞ্চে তুলে সিপিএমকে রাজনৈতিক ময়দান দেওয়ার সত্যটাকে প্রতিষ্ঠা করেছেন এলাকার বিধায়ক। খোদ নগরের সুকান্ত মুর্তির সিপিএমের দুই সদস্যকে নিয়ে সুকান্ত জয়ন্তী পালন করেছেন। অথচ সারা রাজ্যে নগর নির্বাচনের নির্ঘন্ট জারি হলেও একজন কার্যকার্তাকেও দায়িত্ব নিয়ে ঘটনার আবহ বিচার করার সুযোগ দেননি ।

বিধায়কের এককেন্দ্রিক রাজনৈতিক সুত্র বুমেরাং হয়ে গেরুয়া শিবিরে আঘাত করবে এটা আজ বলার অপেক্ষা রাখে না। আজ খোদ মহকুমা সদরে গেরুয়াভোট দ্বিধাবিভক্ত । ক্ষোভ প্রশমনে দল যদি উদ্যোগ না নেয় আগামীদিনে সাব্রুমই হবে সিপি(আই)এমের প্রথম মুক্ত রাজনৈতিক শহর।

error: Content is protected !!