শিশুর শরীরে যৌন কষাঘাত ছোট্ট মনে জীবনভর প্রভাব

কল্যাণ অধিকারী(কলকাতা) ঢাকুরিয়ার বিনোদিনী গার্লস হাইস্কুল আক্ষরিক অর্থে রণক্ষেত্র। বছর পাঁচেকের   এক শিশুকে যৌন হেনস্থার মতো গভীর অভিযোগ। দিদিদের মতো “মিটু” লিখে জানাতে পারেনি শিশুটি। স্কুল থেকে ফিরে গোপনাঙ্গে ব্যথা নিয়ে কুঁকড়ে গিয়েছিল। ‘মা’ বুঝেছিল মেয়ের কষ্ট। আঁতকে উঠেছিল যা এতদিন কাগজে পড়েছে, দেখেছে টিভি তে, সেটাই কিনা! গাল গড়িয়ে নেমে আসছে মাতৃত্বের জল। শুনতে হচ্ছে ‘মা ওখানটায় বড্ড কষ্ট হচ্ছে পারছি না দাঁড়িয়ে থাকতে’।

পুলিশ একটু সহানুভূতি দিয়ে বিবেচনা  করতে পারতো। অভিভাবকদের ক্ষোভ ঝড়ে পড়বে এটাই ছিল স্বাভাবিক। একরত্তি শিশু স্কুলে পড়াশোনায় যার জোর । তার শরীরে জোর করে এঁকে দেওয়া হল যৌন হেনস্থার চিত্র। জেলা-রাজ্য ছাড়িয়ে দেশজুড়ে একের পর এক স্কুল পড়ুয়ার উপর এমন ঘটনা ঘটাচ্ছেন ‘স্যার’ শব্দে কলঙ্ক টানা অকৃতজ্ঞ অমানুষ গুলো । মানুষের মনে ঘটনাগুলো গভীরভাবে প্রভাব ফেলছে। দ্রুত বিচার প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে সাজা দেওয়া জরুরী। নইলে ক্ষোভের স্রোত বাঁধ ভেঙে পড়তে বেশি সময় নেবে না।

তবে এটাও ঠিক অভিভাবকদের সংযম হওয়াটা উচিৎ। তাদের মারে কিছু শিক্ষক-শিক্ষিকা আহত হয়েছেন। এটাকেও মেনে নেওয়া যায় না। সব শিক্ষক তো এক নয়। প্রকাশ্য রাস্তায় শিক্ষিকাদের উপর চরম অভদ্রতা শোভা পায় না। হয়ত ওই সময় কোন বে-এলাকার মানুষ উস্কানি দিয়ে পরিস্থিতি উত্তপ্ত করেছে। যার ফল স্বরূপ পুলিশেরও নাকি চোট লেগেছে। যদিও এই চোট আঘাত সেরে যাবে। শিক্ষিকা ফিরে আসবেন স্কুলে। কিন্তু শিশুর শরীরে ও ছোট্ট মনে সে কষাঘাত করা হলো এ প্রভাব পারবে তা ভুলে যেতে ! রাতে ঘুমের মাঝে অমানুষ ‘স্যার’ কালো দু হাত নিয়ে স্বপ্ন-এ ফিরে আসবে না তো? পাশে থাকা মাকে জড়িয়ে নিঃশ্বাস নেবে একরত্তি।

স্যার হোক বা পুলকার চালক উভয়ের দায়িত্ব স্কুল পড়ুয়াদের প্রতি সদয় হওয়া। ছেলেবেলা সচল রাখা। বইয়ের পাহাড় বয়ে শিরদাঁড়া বেঁকে যাওয়া শৈশবকে পোক্ত করা। ভবিষ্যৎ গড়ে তুলবার প্রানায়ম শেখানো । হচ্ছে তার বিপরীত। ক’দিন আগের কথা, হাওড়া শহরের এক নামী স্কুলের দুই পুলকার চালকের হাতে যৌন নির্যাতনের শিকার ষষ্ঠ শ্রেণীর এক স্কুল পড়ুয়া ছাত্রী। ঘটনায় অভিযোগ জমা পড়বার কিছু সময়ের মধ্যে গ্রেফতার করা হয় দুই অভিযুক্তকে। এতটা বিকৃত হচ্ছে কেন সমাজ? প্রশ্নের উত্তর হয়ত ডিকশনারি অথবা আইনের পাতায় নেই ! থাকলেও ফলপ্রসূ হবার আগেই ঘটে যাচ্ছে কোন রাজ্য বা দেশের কোন প্রান্তে একি ঘটনা। বচসা শেষে ধ্বস্তাধস্তি বাকিটা কাগজের পাতায়, টিভির পর্দায়। মাথা ফাটিয়ে কাঁদছে কিশোরী, আক্রান্ত শিক্ষিকা, আহত পুলিশ।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here