জনসেবায় সেরা দেওয়ার আহ্বান মুখ্যমন্ত্রীর

আগরতলা, ১৮ এপ্রিলঃ আজ টেলিকনফারেন্সের মাধ্যমে ত্রিস্তর পঞ্চায়েতের প্রায় ১২০০ নির্বাচিত জন প্রতিনিধিদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেব। কোভিড-১৯ সংক্রান্ত সর্বশেষ পরিস্থিতি সম্পর্কে খোঁজ খবর নেন তিনি।
জননিরাপত্তায়, লকডাউন চলাকালীন এবং পরে, সামাজিক দূরত্বের নিয়মগুলি যথাযথভাবে অনুসরণ করার বিষয়টি নিশ্চিত করতে তাদের সবাইকে উৎসাহিত করেন।

এছাড়া করোনা মোকাবেলায় গৃহীত বিভিন্ন পদক্ষেপ সম্পর্কেও তাদের অবগত করেন তিনি। এলাকায় স্থানান্তরিত শ্রমিক সহ যাদের প্রয়োজন, তারা খাওয়া, টাকা ও অন্যান্য সুযোগ সুবিধা পাচ্ছে কিনা, এর খোঁজ নিতে বলেন।
এছাড়া সীমান্ত এলাকায় গ্রাম প্রধানদের প্রতি বিশেষ অনুরোধ করে বলেন, সামাজিক পর্যবেক্ষণ বৃদ্ধি করার জন্য। যাতে বাংলাদেশ থেকে কেউ প্রবেশ করতে না পারে।

এদিন মুখ্যমন্ত্রী বলেন যে রাজ্য সরকার ইতিমধ্যেই শুধুমাত্র এডিসি এলাকায় ১৮০ কোটি টাকা নগদ আর্থিক সাহায্য প্রদান করেছে। এছাড়া গোটা রাজ্যে ২৩৫ কোটি টাকা বিভিন্ন প্রকল্পে মানুষকে আর্থিক সাহায্য করা হয়েছে। এদিন নানা প্রকল্পের কথা উল্লেখ করে মুখ্যমন্ত্রী বলেন যে মানবিক দৃষ্টিকোণ থেকে এই সময়ের মধ্যে রাজ্যবাসীর কোন অসুবিধা হচ্ছে কিনা তা যেন পঞ্চায়েত পর্যন্ত নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিরা নজর রাখেন। এবং এইক্ষেত্রে তারা যেন নিজের সেরা পরিষেবা প্রদান করেন।

মুখ্যমন্ত্রী বলেন যে কেন্দ্র ও রাজ্য সরকার এই কঠিন সময়ে মানুষের পাশে দাঁড়ানোর জন্য যেসব প্রকল্প গুলি ঘোষণা করেছে, তা সঠিক অর্থে মানুষের কাছে পৌঁছেছে কিনা এ বিষয়ে খোঁজখবর নিতে হবে। লকডাউনের পরে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করে তোলার জন্য ১০০ দিনের লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে কাজ করার আহ্বান জানান মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন সবাই যদি নিজেদের নির্দিষ্ট সময়ের বাইরে গিয়ে কাজ করে তবে অবশ্যই অভীষ্ট লক্ষ্যে পৌঁছানো সম্ভব।

মুখ্যমন্ত্রী বলেন যে, প্রধানমন্ত্রী ইতিমধ্যেই সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে এমজিএন রেগার কাজ করার জন্য অনুমতি দিয়েছেন। অর্থের সংকুলানও রয়েছে। রেগা শ্রমিকদের ব্যাংক একাউন্টে বকেয়া মজুরিও পাঠিয়ে দেয়া হয়েছে। এ বাবদ দেয়া হয়েছে ৯৪কোটি টাকা। এছাড়াও নতুন কাজের জন্য ৬৪ কোটি টাকা মঞ্জুর করা হয়েছে বলে জানান মুখ্যমন্ত্রী।

মুখ্যমন্ত্রী বলেন এই সময়ের মধ্যে মানুষের কাছে সাহায্য পৌঁছে দেওয়া সহ বিনামূল্যে গণবণ্টন ব্যবস্থার প্রদানের ক্ষেত্রে ব্যাপক সাফল্য এসেছে। প্রায় ৯৪ শতাংশ মানুষ এর সুবিধা গ্রহণ করেছেন। এছাড়া বিভিন্ন সামাজিক ভাতা দেয়া হয়েছে দুই মাসের। ৭৫ কোটি টাকা এই বাবদ রাজ্য সরকার মঞ্জুর করে দিয়েছে।

এছাড়া মুখ্যমন্ত্রী ত্রাণ তহবিল থেকে বিভিন্ন প্রকল্পের মাধ্যমে সুবিধা দেয়া হচ্ছে। নির্দিষ্ট সুবিধাভোগীরা তা পাচ্ছেন কিনা এ বিষয়ে খোঁজখবর নেওয়ার জন্য বলেন মুখ্যমন্ত্রী। ইটভাট্টার শ্রমিক, জুমিয়া, জব কার্ড হোল্ডার, নিউজপেপার হকার, স্ট্রিট ভেন্ডার, ফুল চাষি, তাদের যে আর্থিক সাহায্য প্রদান করা হচ্ছে, যোগ্যরা পাচ্ছে কিনা, সে বিষয়ে নজরদারি রাখার জন্য বলেন মুখ্যমন্ত্রী।

এছাড়া উজ্জ্বলা যোজনায় ডিলারদের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে যাতে প্রকৃত সুবিধাভোগীরা সেই সুবিধা পাওয়ার ক্ষেত্রে কোন ধরনের সমস্যা না হয়। এক্ষেত্রে জনপ্রতিনিধিদের উদ্দেশ্যেও নজর রাখার জন্য আহবান রাখেন। তিনি বলেন যদি কেউ সুবিধা না পেয়ে থাকে তবে পরবর্তী সময়ে এর জবাব দিতে হবে সংশ্লিষ্ট এলাকার জনপ্রতিনিধিদের।
এছাড়া যারা বহিঃরাজ্যে রয়েছেন, তাদের জন্য রাজ্য সরকার সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছে। সেক্ষেত্রেও নির্দিষ্ট মানুষ সাহায্য পাচ্ছে কিনা, তা এলাকাভিত্তিক নজর রাখার জন্য বলেন মুখ্যমন্ত্রী।

মুখ্যমন্ত্রী এদিন ফের বিশেষ করে উল্লেখ করেন যে, বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী এলাকায় যাতে কোন বিদেশী প্রবেশ করতে না পারে সেদিকে নজর রাখার জন্য। সার্বিক ভাবে সরকারি প্রকল্প বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে সবাইকে নিজের সেরাটা উজাড় করে দেওয়ার জন্য আহ্বান জানান মুখ্যমন্ত্রী।

error: Content is protected !!