প্রতিদিন বাড়ছিলো স্ত্রীয়ের উপর অত্যাচার,তারপর……….

গৌতম পাল(রায়গঞ্জ) স্ত্রীর জীবিত অবস্থাতেই মাথা মুড়িয়ে শ্রাদ্ধ করেছেন, শোবার ঘরের মেঝে খুঁড়ে তৈরি করে ফেলেছেন কবরও । এবার স্ত্রীকে খুন করে মেরে ফেলার জন্য স্ত্রীর গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন দেওয়ার চেষ্টা করতে ব্যার্থ হয়ে ধরা পরে যান স্বামী । অত্যাশ্চর্য ঘটনা হলেও এই ঘটনার সাক্ষী থাকল উত্তর দিনাজপুর জেলার রায়গঞ্জ শহরের মিলনপাড়ার বাসিন্দারা । অভিযুক্ত স্বামী নরেশ মোদককে গ্রেপ্তার করেছে রায়গঞ্জ থানার পুলিশ । ভয়াবহ এই ঘটনার শিকার হতে যাওয়া স্ত্রী  জ্যোৎস্না মোদক এখনও আতঙ্কগ্রস্ত । পুলিশ ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে। জ্যোৎস্না দেবী ও তার সন্তানদের পাশে এসে দাঁড়িয়েছেন এলাকার কাউন্সিলর পুষ্পা মজুমদার।

পারিবারিক সূত্রে জানা গিয়েছে, রায়গঞ্জ পৌর এলাকার ৭ নং ওয়ার্ড মিলনপাড়ার বাসিন্দা পেশায় কাঠমিস্ত্রী নরেশ মোদক প্রায় প্রতিদিনই মদ্যপ অবস্থায় এসে স্ত্রী জ্যোৎস্নাদেবীকে মেরে ফেলার হুমকি দিয়ে থাকেন। মদ্যপ অবস্থায় বাড়িতে প্রতিদিনই অশান্তি ঝামেলা করে নরেশ। এই ঘটনায় তিতিবিরক্ত পাড়া প্রতিবেশীও। নরেশের স্ত্রী জ্যোৎস্না দেবী পরিচারিকার কাজ করেন । তাদের দুই পুত্র সন্তানই শহরের একটি নামী স্কুলের পঞ্চম ও অষ্টম শ্রেনীর ছাত্র ।  অভিযোগ গত রবিবার থেকেই স্ত্রী জ্যোৎস্না দেবীকে মেরে ফেলার হুমকি দিচ্ছিল নরেশ । পাকা ঘর হলেও মাটির মেঝে খুঁড়ে স্ত্রীর জন্য কবরও তৈরি করে রেখেছেন কদিন আগেই । এসব দেখে দুই ছেলে বাবাকে বিরত করার চেষ্টা করলে তাদেরও প্রানে মেরে ফেলার হুমকি দেয় সে ।

গত দুদিন আগে নিজের মাথা মুড়িয়ে এসে বলেন তিনি স্ত্রী জ্যোৎস্নার শ্রাদ্ধ করে ফেলেছেন। এরপর রেশন থেকে জ্যোৎস্নাদেবীর নিয়ে আসা কেরোসিন তেলের জার থেকে কেরোসিন তেল স্ত্রীর গায়ে ঢালতে থাকেন তাকে পুড়িয়ে মেরে ঘরের মেঝেতে খোঁড়া কবর দেবেন বলে । কেরোসিনের তীব্র গন্ধে পাশের বাড়ি থেকে ছুটে আসেন জ্যোৎস্নাদেবীর জা।  দেশলাইয়ের কাঠি জ্বালানোর আগেই তিনি জ্যোৎস্নাদেবীকে নরেশের হাত থেকে ছিনিয়ে নিয়ে বাঁচান । এরপরই খবর দেওয়া হয় রায়গঞ্জ থানায়। রায়গঞ্জ থানার পুলিশ এসে গ্রেপ্তার করে নরেশ মোদককে । গতকালই তাকে আদালতে তোলা হয়েছিল । বিচারক তাকে ১০ দিনের জেল হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছেন ।

এই ঘটনা প্রসঙ্গে নির্যাতিতা স্ত্রী জ্যোৎস্না মোদক জানিয়েছেন, প্রতিদিনই মদ্যপ অবস্থায় এসে চরম অশান্তি করত তার স্বামী নরেশ মোদক । কদিন ধরেই তাকে মেরে ফেলার হুমকি দিচ্ছিল। এমনকি মেরে কবর দেওয়ার জন্য ঘরের মেঝেতে পাঁচ ফিটের গর্তও খুঁড়ে রেখেছিল তার স্বামী । শুধু তাই জীবিত অবস্থায় তার শ্রাদ্ধও করে ফেলেছেন বলে জানানো হয়েছিল ।  নরেশ ও জ্যোৎসনার বড় ছেলে অষ্টম শ্রেনীর ছাত্র  যীশু মোদক জানিয়েছে, তার বাবা মায়ের উপর চরম অত্যাচার করত । কবর খুঁড়তে বাধা দিতে গেলে তাকেও মেরে ফেলার হুমকি দেয় বাবা নরেশ । এলাকার তৃনমূল কাউন্সিলর পুষ্পা মজুমদার জানিয়েছেন, কোনও কাজকর্ম পাচ্ছিলনা দেখে নরেশকে কাঠের কাজের ব্যাবস্থা করে দেওয়া হয়েছিল। তাও সে শোধরায়নি । দোষীর কঠোর শাস্তির দাবিতে সরব হয়েছেন এলাকার তৃনমূল মহিলা সমিতি।

 

 

error: Content is protected !!