সিকিআধুলি বিজেপির মোড়লের ফরমানে কাজ হারাচ্ছে প্রতিবন্ধী

নিজেস্ব প্রতিনিধিঃ যে যায় লঙ্কায় সেই হয় রাবন । বামআমল হোক বা রামআমল দুই আমলেই রাজ্যবাসীকে পড়তে হচ্ছে নানা অসুবিধার মুখে । দীর্ঘ ২৫ বছরের বামআমলে দেখা গেছে সিপিএমের পতাকা নিয়ে দলীয় মিছিলে হাঁটলেই সরকারি চাকরি থেকে নানা সুযোগ সুবিধা পাওয়া যেতো। আর বিরোধী দল করলেই সরকারি সমস্ত সুযোগ সুবিধা থেকে বঞ্চিত করা হতো।

সরকারের পরিবর্তন হয়েছে। ২৫ বছরের বাম শাসনের অসহ্যে অতিষ্ঠ হয়ে রাজ্যের মানুষ ভারতীয় জনতা পার্টির সরকার রাজ্যে প্রতিষ্ঠিত করেছেন । রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেব “সব কা সাথ সব কা বিকাশের কথা বলেছেন”। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রীর সেই বক্তব্যকে গুরুত্ব দিচ্ছেন না রাজ্য বিজেপির একাংশ সিকি-আধুলি নেতা-কর্মী থেকে শুরু করে সরকারি আধিকারিকরা।  একবছর আগে যাদের দেখা যেতোনা বিজেপির মিছিলে-মিটিং, তারাই এখন বিজেপির হর্তাকর্তা বিধাতা। শহর রাজধানী ছাড়িয়ে বিভিন্ন জেলায় জেলায় একাংশ বিজেপির হাফ প্যান্টের নেতারা এখন তোলাবাজি থেকে শুরু করে নানা দুর্নীতিতে জড়িয়ে পড়ছে বলে অনেক অভিযোগ । তাদের জ্বালায় অতিষ্ঠ সাধারন মানুষ।

সম্প্রতি দক্ষিন ত্রিপুরার নলুয়া অভয়নগরের দহর কলোনির বাসিন্দা প্রতিবন্ধী মহিলা বীনা দেবনাথকে অঙ্গনওয়ারির চাকরি থেকে বিতাড়িত করা হলো।

ডাকবার্তার প্রতিনিধিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বীণা দেবনাথ জানিয়েছেন, ঋষ্যমুখ অঙ্গনওয়ারিতে বিগত ২০ বছর ধরে তিনি খিচুড়ি রান্না করার কাজ করছিলেন । কিন্তু গত ১২ই নভেম্বর কোনো এক অজানা কারণে তার অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের প্রধান শান্তি দাসের কাছে একটি চিঠি আসে যেখানে বীণাদেবীকে সরিয়ে অন্য কাউকে নিযুক্ত করার আবেদন করা হয় এবং সেই চিঠিটিকে ব্লক অফিসে জমা দিতে বলা হয়। সেই চিঠির একটি কপি তার কাছে রেখে দেন।

তার অসহায় অবস্থার কথা জানিয়ে তিনি বলেন, “আমি একজন প্রতিবন্ধি মহিলা, এই চাকরি করে কোনোরকমে সংসার চলে । আমাদের সম্বল বলতে অঙ্গনওয়ারির কাজ করে প্রাপ্ত ৪৫০০ টাকা। আমার ছেলে এখন ষষ্ঠ শ্রেণীতে পড়ছে।  পড়াশুনা ও সংসার খরচও এই টাকায় চলতো। কিন্তু আমাকে চাকরি ছেড়ে দিতে বলেছে। এখন আমার ভিক্ষা করা ছাড়া কোনো উপায় নেই।”

১৯৯৮  সালে মাত্র ২০০টাকায় চাকরি শুরু করেছিলেন । কিন্তু এত বছর চাকরি করার পর এখন হঠাৎ করেই চাকরি চলে যাওয়ার চরম সমস্যার মুখে পড়েছেন বীণা দেবী ও তার পরিবার।

কিন্তু রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী বারবার বলছেন যে রাজ্যবাসীর সুখে দুঃখে এগিয়ে যেতে। মানুষের পাশে দাঁড়াতে সেখানে কেনো বিজেপির স্বঘোষিত সিকি-আধুলি নেতারা গরীব মানুষের মুখের খাওয়ার কেঁড়ে নিচ্ছেন? এ নিয়ে চারদিকে ছড়িয়ে পড়েছে নানা গুঞ্জন।  এই সব কথা কি আদেও  জানেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী? না কি মুখ্যমন্ত্রীকে আড়ালে রেখেই এইসমস্ত কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন সিকি-আধুলি নেতারা।

 

 

error: Content is protected !!