অর্ঘ্য মাহাতোঃ ভারতীয় মহাকাশ গবেষণা সংস্থা, ‘ইসরো’র জন্মদাতা বিক্রম সারাভাইয়ের দূরদর্শিতায় মানব জাতির সেবার লক্ষ্যে এগিয়ে চলেছে । বুধবারের স্যাটেলাইট মিশনের লক্ষ্য ছিল, ভারত ভূ-ভাগের উত্তরে অবস্থিত জম্মু-কাশ্মীর, উত্তর পূর্বাংশে ত্রিপুরা, আসাম,সিকিম, মনিপুর,নাগাল্যান্ড মেঘালয়, মিজোরাম ও অরুণাচল প্রদেশের বিস্তীর্ণ পাহাড়ি অঞ্চলে যোগাযোগ ব্যবস্থার সাথে ইন্টারনেট পরিষেবা সাধারণ মানুষের কাছে পৌঁছে দেওয়া । ব্রিটিশের পরাধীনতা থেকে মুক্ত হলেও ভারতবর্ষের ৩.৪২ শতাংশ দেশবাসী আজও অন্যান্য ভৌগোলিক অঞ্চলের মতো প্রযুক্তিগত সুযোগ সুবিধা থেকে বঞ্চিত হয়ে আসছে। বঞ্চিত-নিপীড়িত-শোষিতদের জন্য ধংসাত্বক রাজনীতিতে তৈরী রাজনেতাদের সিংহাসন সময়ের সাথে বদলায় না , বদলায় শুধু রাজা। বিগত ৭০ বছরের দেশ গঠনে রাজার পট পরিবর্তন হলেও মানুষের পরিবর্তন, সামাজিক পরিবর্তন, জাতীয় ঐক্যতাকে জনগণের নির্বাচিত প্রতিনিধির হাতে তুলে দেওয়ার যে ভুল ভারতবর্ষ করে এসেছিলো সেই চেতনার সমাপ্তি ঘটতে চলেছে । গণতান্ত্রিক নির্বাচনে অংশ নেওয়া জনগণের কাছে তাদের প্রতিনিধিকে নির্বাচিত করার আগে তারা একাধিকবার ভাবতে শুরু করেছে । প্রযুক্তির কাছে পরাধীনতা স্বীকার করছে দুর্নীতি।
উত্তর-পূর্ব রাজ্যগুলির প্রযুক্তির বিপ্লব ঘটে গেলো বুধবার। “হাতের মুঠোয় দুনিয়া” থেকে বঞ্চিত এখানকার ভারতবাসীকে “ডিজিটাল ইন্ডিয়া”র সাথে পরিচয় করতে ভারতীয় মহাকাশ গবেষণা কেন্দ্রের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। চতুর্থ শিল্পবিপ্লবের যুগে প্রযুক্তির বিপ্লব, উত্তর পূর্বাঞ্চলের রাজ্যগুলির উন্নয়নে এক বৃহত্তর পরিবর্তনের আগমনী বার্তা।
বুধবার বিকাল ৫টা বেজে ৮ মিনিটে অন্ধ্রপ্রদেশের শ্রীহারিকোটার সতীশ ধাওয়ান স্পেস স্টেশন থেকে জিএসএলভি এমকে-৩ ডি-২ লন্চিং ভেহিকেলের মাধ্যমে জিস্যাট২৯ উপগ্রহের সফল উৎক্ষেপণ করা হয়। জিএসএলভি এমকে-৩ ডি-২ এর প্রথম ডেভেলপমেন্ট মিশন ২০১৭ সালের ৫ই জুন করা হয়েছিল।এটি তার দ্বিতীয় মিশন। প্রথম মিশনে জিস্যাট ১৯ স্যাটেলাইটটি উৎক্ষেপণ করে। দ্বিতীয় মিশনের সাফল্যের পর একে অপারেশনাল উড়ানে পিএসএলভি ও জিএসএলভির সাথে নিযুক্তি হবে।
দেশের সীমান্তবর্তী স্থানে বসবাসকারী ভারতবাসীদের প্রতিদিন সন্ত্রাসবাদী সহ পাকিস্তানের নৃশংসতার সম্মুখীন হচ্ছে। এক্ষেত্রে স্যাটেলাইটের মাধ্যমে যোগাযোগ ব্যবস্থার সাথে, মানুষের আত্মরক্ষার ক্ষেত্রে অগ্রশীল ভূমিকা গ্রহণ করবে।