বিশ্বেশ্বর মজুমদার(শান্তিরবাজার) বাঙালির শ্রেষ্ট শারদীয়া উৎসবের রেশ কাটতে না কাটতেই শুরু হয়েছে লক্ষীপূজার প্রস্তুতি । প্রচলিত কথায় আছে বাঙালির ১২ মাসে ১৩ পার্বন। এরই মধ্যে রয়েছে লক্ষীপূজা। এই পূজাকে আবার কোজাগরী লক্ষীপূজাও বলা হয়। বাঙালির প্রতিটি ঘরে ঘরে এই লক্ষীপূজা করা হয়। পূজার মূল লক্ষ্য ধনদেবী লক্ষীকে সন্তুষ্ট করা । এই পূজার সকল লোকজন যথেষ্ট পরিমানে সাধ্যমত খরচ করেন । মাকে সন্তুষ্ট করতে কোনোপ্রকার ত্রুটি রাখতে চাননা । লক্ষীপুজোকে কেন্দ্র করে লক্ষী মায়ের মূর্তি থেকে শুরু করে মাটির সামগ্রী তৈরি করতে ব্যস্ত কুমোর পাড়ার মৃৎ শিল্পীরা । পুরুষদের পাশাপাশি মহিলারাও এই কাজে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন। এমনটাই চিত্র ফুটে ওঠে আমাদের ক্যামেরার পর্দায় ।
শান্তির বাজার মহকুমার অন্তর্গত জোলাইবাড়ি কুমোর পাড়ার মৃৎ শিল্পীরা চরম লক্ষী প্রতিমা থেকে শুরু করে পুজোয় ব্যবহৃত মাটির সামগ্রী তৈরিতে। ডাকবার্তার প্রতিনিধির সঙ্গে কথা বলতে গিয়ে মৃৎ শিল্পীরা তাঁদের অভাবের কথা তুলে ধরেন আমাদের সামনে। বলেন যে, দীর্ঘ বাম আমলে তেমন কোনো বিশেষ সাহায্য পাননি। একটি মেশিন ও মাটির ঘর সাহায্য হিসাবে পেয়েছেন । এই মাটির কাজ করেই তাদের সংসার চালাতে হয় । পূর্বে বাম আমলে রাজ্য সরকার তাদের কোনোপ্রকার খোঁজখবর নেয়নি। এখন বর্তমানে রাজ্যে নতুন সরকার গঠন হয়েছে। এখন মৃৎশিল্পীদের একটাই দাবি নতুন সরকার যেন ওনাদের পাশে এসে দাঁড়ায় ও সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেন। শিল্পীদের প্রথম দাবী হলো তাদের কাজের সাহায্যের জন্য একটি বৈদুতিক মেশিন প্রদান করা । বিগত বাম আমলে হাতে ঘোরানো যে মেশিনটি প্রদান করা করেছিল তা দিয়ে কাজ করা খুবই কষ্টকর। হাত দিয়ে মেশিন ঘুরিয়ে বুকে ব্যাথার সৃষ্টি হয়। তাই নতুন সরকার যদি ওনাদের একটি বৈদ্যুতিক মেশিন প্রদান করে তাহলে ওনারা বিশেষ উপকৃত হবেন। অপরদিকে মৃৎশিল্পীদের সাথে কথা বলে জানা যায় যে পূর্বে জোলাইবাড়ি কুমোর পাড়ার প্রায় ৭০ পরিবারে লোকজন বসবাস করতেন । তারা সকলেই মাটির জিনিস তৈরির কাজ করতো। কিন্তু বর্তমানে এই মাটির জিনিসের চাহিদা দিন দিন কমতে শুরু করেছে ।তাই সকলেই মাটির জিনিস ছেড়ে কাঁসা পিতলের জিনিস তৈরির দিকে আগ্রহ বাড়াচ্ছেন। তাই অনেকেই এই কাজ ছেড়ে দিয়ে জীবনযাপনের জন্য অন্য কাজ বাছাই করে নিয়েছেন। এখন বর্তমানে এই গ্রামে প্রায় ৩৫ পরিবারের মতো লোকজন মাটির কাজ করে জীবন যাপন করছেন। তাই বর্তমান রাজ্য সরকার যদি এই কাজকে টিকিয়ে রাখার জন্য মৃৎশিল্পীদের সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেন তাহলে ওনারা খুবই উপকৃত হবেন। এখন দেখার বিষয় রাজ্যসরকার এই মৃৎশিল্পীদের সামগ্রিক উন্নয়নে কিপ্রকার পদক্ষেপ গ্রহণ করেন।