অমলেন্দু মালাকার,কাটিগড়া (আসাম) রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী সর্বানন্দ সনোয়ালের পরিবর্তনকামী শাসন ব্যাবস্থায় কিছুটা অনাকাঙ্খিতভাবে শোষিত,বঞ্চিত ও নিপীড়িত মানুষ অহরহ লড়ে যাচ্ছেন মৌলিক অধিকার আদায়ের লড়াই । কাছাড়ের আন্তর্জাতিক সীমান্তবর্তী এলাকার রাস্তা,আলো এবং বিশুদ্ধ পানীয় জলের আকাল পড়েছে,অথচ সর্বানন্দ সরকারের প্রশাসনিক যন্ত্র নির্বিকার । এই পরিস্থিতিতে দেওয়ালে পিঠ ঠেকে গেছে ভারত-বাংলা আন্তর্জাতিক সীমান্তবর্তী জিরোপয়েন্টে অবস্থিত টুকেরগ্রাম নতুনবস্তীর কয়েক‘শ পরিবারের হাজার হাজার জনতার ।
শুক্রবার সহনশীলতার সব বাঁধ ভেঙে পড়ে তাদের। মৌলিক অধিকার আদায়ের লড়াইয়ে শেষপর্যন্ত গণতান্ত্রিক আন্দোলনের পথ বেছে নেন টুকেরগ্রাম নতুনবস্তীর আবাল-বৃদ্ধ-বণিতারা । কাটিগড়া মহকুমা কার্য্যালয় ক্যাম্পাসে শতাধিক জনতা ধর্ণায় বসে বাঁচার অধিকার চাই, রাস্তা চাই প্রভৃতি শ্লোগানে আকাশ বাতাস ভারী করে বঞ্চনা,বিড়াম্বনার সুদীর্ঘ কেচ্ছা তুলে ধরেন তারা । আন্দোলনকারীদের বক্তব্য মতে, মুখ্যমন্ত্রী সর্বানন্দ সনোয়ালের নির্দেশ ক্রমে আছে । অচল হয়ে পড়েছে বিদ্যুতের কাজ ও । কাছাড়-করিমগঞ্জ দুই জেলার ভৌগোলিক সীমান্তরেখার সাকুল্যে কুড়ি মিটার জমি নিয়ে একসময় দেখা দিয়েছিল চরম বিতর্ক । যদিও উন্নয়নের পথে কোনও বিতর্কই গ্রহনযোগ্য নয়। এরকম একটা মনোভাব নিয়ে সেপ্টেম্বর মাসের গোঁড়ার দিকে কাছাড়ের জেলাশাসক ডঃলক্ষণন ও কাটিগড়ার বিধায়ক প্রস্তাবিত সড়কের কাজ অর্ধনির্মিত হয়ে পড়ে অমরচাঁদ জৈনের পরিদর্শনকালে দুই জেলার পদস্ত অফিসিয়েলদের তৎপরতায় ভারত-বাংলা সীমান্তের জিরো পয়েন্টে অবস্থিত বিতর্কিত জমির সীমানা নির্ধারণ সহ জমি জরিপ করা হয় । সবদিক খতিয়ে দেখে কাছাড়ের জেলাশাসক ডঃলক্ষণন যুদ্ধকালীন তৎপরতায় কাজ শুরু করার নির্দেশও দিয়েছিলেন সেইসময় । নির্দেশ মতে সড়ক ও বিদ্যুত সম্প্রসারণের কাজে নিযুক্ত ঠিকাদাররা কাজও শুরু করেছিলেন । কিন্তু বিধিবাম, কাজ শুরু করতে না করতেই কাজে বাগড়া দিতে শুরু করে বদরপুর রসুলপুরের একাংশ স্বার্থান্বেষীরা ।
জমি জবরদখল করে উন্নয়নের পথে প্রতিবন্ধক সৃষ্টিকারী ওই সমস্ত স্বার্থান্বেষীদের দমন করার পাশাপাশি আটকে পড়া সড়কের কাজ,বিদ্যুতের কাজ দ্রুত বাস্তবায়নের দাবীতে এদিন ফের আরও একদফা স্মারকপত্র তুলে দেন মনোরঞ্জন দাস,পরেশচন্দ্র দাস,শান্ত দাসরা। দায়িত্বপ্রাপ্ত সার্কল অফিসার দেবজিতা গগৈ এগিয়ে এসে স্মারকপত্র গ্রহন করেন এবং বিষয়টি জেলাশাসকের গোচরে এনে দ্রুত ব্যাবস্থা গ্রহনের আশ্বাস দেন তিনি ।
উল্লেখ্য, ১৯৭০ সালে ভারত সীমান্তের বরাক তীরবর্তী গড়ে উঠা গ্রামটির দুর্দশা যেন কিছুতেই কাটতে চাইছে না । মুখ্যমন্ত্রী সর্বানন্দ সনোয়ালের আশীর্বাদধন্য হয়েও টুকেরগ্রামবাসীর ভাগ্যে জুটেনি নুন্যতম সুযোগসুবিধা । কাছাড় ও করিমগঞ্জ দুই জেলার প্রশাসনিক কর্তৃপক্ষের উদাসীনতায় সীমান্তবর্তী টুকেরগ্রামের সড়ক নির্মান সহ বিদ্যুত সম্প্রসারনের কাজ ব্যাহত হয়ে পড়েছে । অথচ যুদ্ধকালীন তৎপরতায় কাজ সমূহ সম্পন্ন করার নির্দেশ দিয়েছিলেন স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী । মোদ্দাকথা বাস্তবে মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশ কার্য্যকরী হয়নি । এতে হতাশ হয়ে পড়েছেন এলাকার মানুষ । মনোরঞ্জন দাস,পরেশচন্দ্র দাস,শান্ত দাসরা জানান কাটিগড়া সীমান্তর সরকারী জমির এগারশো মিটার দৈর্ঘ্য ও দশমিটার প্রস্ত নির্ধারণ করে খুটি পোতার কাজ সম্পন্ন করে মাটি ফেলার কাজও শুরু হয়েছিল। কিন্তু অদৃশ্য কারনে থমকে পড়ে আছে নির্দিষ্ট কাজ সমূহ । ফলে যাতায়াতের ক্ষেত্রে সবল সড়ক ও বিদ্যুতের আলো কবে জ্বলবে ? এ নিয়ে ধোঁয়াশা কাটছে না। তবে কি মুখ্যমন্ত্রী সর্বানন্দ সনোয়ালের প্রতিশ্রুতি আসার ? এনিয়ে অবশ্যই প্রশ্ন থেকে যাচ্ছে।