বিয়ের পর একবছর ভালোই চলছিলো সবকিছু কিন্তু ………………….

  পাঁশকুড়া ২৭ অক্টোবর : দাবিমতো পন আদায় করতে না পেরে বধূকে পুড়িয়ে মারার অভিযোগ উঠল স্বামী ও শাশুড়ির বিরুদ্ধে। মর্মান্তিক ঘটনাটি ঘটেছে পাঁশকুড়া থানার কানাশি কিশোরচক গ্রামে। মৃত বধুর নাম কুলসুম বিবি(২২) । মৃতের বাবা শেখ আব্দুল কবিরের অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ জামাই মনিরুল ইসলাম ও তার মা চম্পা বিবিকে গ্রেপ্তার করেছে । ধৃতদের শনিবার তমলুক জেলা আদালতে তোলা হলে বিচারক তাদের ১৪ দিনের জেল হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছেন । স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে বছর চারেক আগে পাঁশকুড়ার কানাশি কিশোরচকের বাসিন্দা শেখ মনিরুল ইসলাম মুসলিম ধর্ম মতে বিয়ে করে তমলুকের চক কাশিমলি গ্রামের বাসিন্দা কুলসুমকে । মনিরুল পেশায় মেশিন ভ্যানের চালক । অভিযোগ বিয়ের সময় ছেলের দাবি মত সমস্ত কিছুই মিটিয়ে দেওয়া হয়েছিল। অভাবের কারণে হাতের একটি বাউটি দিতে পারেননি আব্দুল বাবু । তার জন্য বারবার মেয়ের ওপর মদ খেয়ে টাকা চেয়ে অত্যাচার চালাত জামাই মনিরুল ও শাশুড়ি চম্পা বিবি । বাবার দারিদ্রতার কারনে মেয়েও সেই টাকা চাইতে অস্বীকার করে । তাতেই  শুরু হয় অশান্তি । এর পর গত ২৫ তারিখ গভীর রাতে কেরোসিন তেল ঢেলে বাড়িতেই পুড়িয়ে মারার চেষ্টা করে অভিযুক্তরা । পরে কুলসুমের চিৎকারে প্রতিবেশীরা ছুটে এলে মনিরুল নিজেই স্ত্রীকে বাঁচাতে যায় । তাতে তার দুই হাত ও অগ্নিদগ্ধ হয়। দু’জনকেই রাতে তমলুক জেলা হাসপাতালের বার্ন ওয়ার্ডে ভর্তি করে স্থানীয় বাসিন্দারা।

                                                                         অভিযুক্ত শাশুড়ি

শুক্রবার রাতে মৃত্যু হয় কুলসুম বিবির। পুলিশ জানিয়েছে মৃত্যুকালীন জবানবন্দিতে কেরোসিন তেল ঢেলে  পুড়িয়ে দেওয়ার অভিযোগ স্বামী ও শাশুড়ির বিরুদ্ধে করেছেন কুলসুম। মৃতের বাবা শেক আব্দুল কবিরের অভিযোগ, বিয়ের পর বছর খানেক ওদের ভালোই সংসার চলছিল। ১৪ মাসের একটি কন্যা সন্তান রয়েছে । কন্যা সন্তান হওয়ার পর থেকেই জামাই ও শাশুড়ি অতিরিক্ত পণের দাবিতে অশান্তি শুরু করে । আমরা কয়েকবার পাঁশকুড়া এসে পারিবারিকভাবে আলোচনা করে তা মিটিয়ে গিয়ে ছিলাম । এরকমটা হয়ে যাবে ভাবতে পারিনি ।

                                                       অভিযুক্ত স্বামী

২৫ তারিখ রাতে জামাই আমাদের ফোন করে জানায় মোবাইল ফোন ফেটে গিয়ে  মেয়ে গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েছে। তমলুক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। আমরা হাসপাতালে গিয়ে মেয়ের অবস্থা দেখে  বুঝতে পেরে গতকাল রাতে পাঁশকুড়া থানায় অভিযোগ জানাই । আমার মেয়েকে যাদের জন্য এভাবে চলে যেতে হল আমরা চাই তাদের কঠিন শাস্তি হোক । অপরদিকে মনিরুল সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করে বলে, বাড়িতে টুকটাক অশান্তি হয়েছিল ।তাই স্ত্রী নিজেই গায়ে কেরোসিন তেল ঢেলে আত্মহত্যা করার চেষ্টা করে। আমি তা দেখতে পেয়ে ওকে বাঁচাতে যাই আমার ও দুটো হাত আগুনে পুড়ে গিয়েছে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here