পিতৃপুরুষদের তর্পণ ও পিন্ডদান , বাগবাজারের গঙ্গাতটে উৎসবের আহ্বান

 

অর্ঘ্য মাহাতো(কলকাতা) মহালয়ার ভোরে বীরেন্দ্র কিশোর ভদ্রের গলায় মহিষাসুর মর্দিনীর মধ্যে দিয়ে শুরু হয়ে গেলো বাঙালীর সব থেকে বড় উৎসব দুর্গাপূজা। পিতৃপক্ষের অবসান দেবী পক্ষের সূচনা। প্রতি বছরের  মত এবছর সকাল থেকেই পিতৃতর্পণের জন্য ভিড় বাগবাজার, বাবুঘাট সহ শহরের বিভিন্ন গঙ্গার ঘাট গুলিতে।  মহালয়াতে দেবী দুর্গার আগমনীর সন্ধিক্ষণে পূর্বপুরুষের আত্মার শান্তিকামনায় আত্মসচেতন হিন্দুরা তাদের তর্পণ ও পিন্ডদান করে থাকেন। প্রতি বছর আজকের দিনে অসংখ্য মানুষ তাদের ভক্তি ও শ্রদ্ধার মাধ্যমে ইহলোক ত্যাগ করা ভালবাসার মানুষদের মুক্তির ইচ্ছায় নিজেদের মোক্ষকে ত্যাগ করেন। হিন্দু ঐতিহ্য থেকে আমরা দেখি যে জীবনের প্রতিটি গুরুত্বপূর্ণ কাজ শুরু করার পূর্বে তারা তাদের পূর্বপুরুষদের কাছে আর্শীবাদ প্রার্থনা করে। ভগবান শ্রীরাম লঙ্কা বিজয়ের আগে এদিনে এমনই করেছিলেন ।

তবে এই প্রার্থনা শুধুমাত্র পূর্বপুরুষদের প্রতি ই সীমাবদ্ধ থাকেনা, গঙ্গাবক্ষে যারা অন্জলি দেন তারা পৃথিবীর সমস্ত শুভশক্তিকে আহ্বান করেন । প্রয়াত আত্মাদের এই সমাবেশকে ‘মহালয়’ বলা হয়। উদ্দেশ্য? দেবী দুর্গা যেমন অশুভ শক্তিকে প্রতিহত করেছিলেন তেমনই সমাজকে সচেতন রেখে যুগ যুগ ধরে শুভশক্তির বিকাশ করা। যদিও অনান্য বছরের মত এবছর কিছুটা হলেও দেরীতে শুরু হবে পিতৃতর্পণ। মহালয়া শুরু হয় অমাবস্যা তিথিতে। এবার অমাবস্যা পড়েছে একটু বেলায়। বিশুদ্ধ সিদ্ধান্ত অনুযায়ী সোমবার সকাল ১০টা ৫০ নাগাদ থেকে মঙ্গলবার সকাল ৯টা ৮ মিনিট পর্যন্ত তর্পণ করা যাবে। কোনও কোনও পঞ্জিকাতে আবার  সকাল ১০টা ৪৭ মিনিট থেকে তর্পণ করা যাবে। কিন্তু পঞ্জিকায় যাই লেখা থাকুক না কেনো পিতৃতর্পণ করতে ভোর থেকে গঙ্গার পাড়ে ভিড় জমিয়েছেন সাধারন মানুষ। তর্পণ উপলক্ষে কলকাতার প্রতিটি গঙ্গার ঘাটে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। যাতে কোন অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটে তার জন্য প্রস্তুত রয়েছে প্রশাসন।

 

 

error: Content is protected !!