জাওয়ানদের হাতেই সেজে উঠছে মা দুর্গা

জাওয়ানদের হাতেই সেজে উঠছে মা দুর্গা
“এসেছে শরৎ হিমের পরশ
লেগেছে হাওয়ার পরে
সকাল বেলায় ঘাসের আগায়
শিশিরের রেখা ঝড়ে”
বছর ঘুরে ফিরে এলো শরৎ । দেখতে দেখতে চলে এলো বাঙালীর শ্রেষ্ঠ উৎসব দুর্গাপুজো। সময়ের চক্র ঘূর্ণনে ঋতুরাজ শরৎ আবার ফিরে এলো আমাদের কাছে।  শরৎ মানেই আকাশে সাদা মেঘের ভেলা, মেঘ-রোদ্দুরের লুকোচুরি,শিউলি ফুলের গন্ধ আর কাশফুলের মাতামাতি। দেবীর আগমনের প্রতিক্ষায় সকলে। অসুর-বিজয়িনিরি অকাল বোধনে শারদোৎসব দোরগোড়ায়। শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতিতে ব্যাস্ত রাজধানী আগরতলা সহ জেলার বিভিন্ন পূজামন্ডপ গুলি।
বছরের ৩৬৫ দিন সাধারন মানুষের নিরাপত্তার দায়িত্বে যাদের নিরন্তন প্রয়াস তাদের হাতের ছোঁয়ায় জেগে উঠছে তেলিয়ামুড়া মহকুমার চাকমাঘাটস্থিত ১২ নম্বর টি এস আর ব্যাটেলিয়ানের জাওয়ানদের হাতে তৈরি মন্ডপ।  তেলিয়ামুড়া শহর থেকে ৪ কিলোমিটার দূরে চাকমাঘাট ১২ নম্বর টি এস আর ব্যাটেলিয়ানের সদর কার্যালয়ে প্রতিবছর দুর্গা পুজো অনুষ্ঠিত হয়ে থাকে। পুজোর আয়োজন করে থাকেন বাহিনীর জাওয়ানরা । প্রতিবছর থিম পুজোর আয়োজন করে দর্শনার্থীদের প্রশংসা কুড়ান জাওয়ানরা ।
প্রতিবছরের মত এবছরও পুজোর প্রস্তুতিতে মেতে উঠেছে ব্যাটেলিয়ানের জাওয়ানরা। পুজোর প্রস্তুতি কেমন চলছে তা জানতে ১২ নম্বর ব্যাটেলিয়ানের সদর কার্যালয়ে পৌঁছে গিয়েছিলেন ডাকবার্তা ডট কমের প্রতিনিধি  হিরনময় রায় । কমল পাল নামে বাহিনীর এক জাওয়ান জানিয়েছেন এবছর তাদের পুজোমন্ডপ দক্ষিণেশ্বরের কালীমন্দিরের আমলে তৈরি করা হচ্ছে। মন্ডপটি নির্মাণ করছেন ব্যাটেলিয়ানের জাওয়ানরা । প্রতিদিন ডিউটির পর ১২-১৫ জন জাওয়ান এই মণ্ডপটি নির্মাণ করছেন । বাঁশ,কাঠ, থার্মোকল,কাঠ,কাপড় দিয়ে তৈরি করা হচ্ছে এই মন্ডপ । শুধু মন্ডপ নয় প্রতিমাও তৈরি করছেন বাহিনীর জাওয়ানরা । পুজোর বাজেট নির্ধারিত না থাকলেও জাওয়ানদের প্রদেয় চাঁদা থেকে এই পুজোর সমস্ত খরচ করা হয় । বছরের অনান্য দিনের থেকে পুজোর এই চারটি দিন আনন্দে মেতে থাকেন জাওয়ানরা । পুজো উপলক্ষে প্রতিদিন নানারকমের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়ে থাকে। পুজোর একমাস আগে থেকেই হেডকোয়াটারের পাশে মহাকুমা শাসকের কার্যালয়ের মাঠে তৈরি করা হয় মন্ডপ ও  ওই জাওয়ান আরও জানিয়েছেন প্রতিবছর তাদের পুজো দেখতে ভিড় জমান বহু দর্শনার্থী। আর এত দর্শনার্থী দেখে আনন্দে আত্মহারা হয়ে পড়েন বাহিনীর জাওয়ানরা। আর সেই সময় তাদের পরিশ্রম স্বার্থক হয় বলে জানিয়েছেন ওই জাওয়ান। বছরের অনান্য
দিনের মত পুজোর সময়তে প্রতিদিনের মত ডিউটি করা ছাড়াও বাড়তি ডিউটি করতে হয় তাদের। ডিউটির মাঝে যেটুকু সময় পান সেই সময়তেই পুজোর আনন্দে মেতে ওঠে জাওয়ানরা। এমনটাই জানিয়েছেন ওই জাওয়ান। তাদের আশা প্রতিবছরের মত এবছরও তাদের মন্ডপেও প্রচুর মানুষের সমাগম হবে।
পুজো প্রায় দোরগোড়ায়। চরম ব্যস্ততা বিভিন্ম পুজো মন্ডপে। বাঙালীর প্রধান উৎসব দুর্গাপুজো আজ জাতি-উপজাতি সকল অংশের মানুষের কাছেই সমাদৃত। আর মাত্র কয়েকটা দিনের অপেক্ষা। তারপরেই পুজোর আনন্দে মেতে উঠবে শহর থেকে গ্রাম সকল অংশের মানুষ। তারই প্রতীক্ষায় প্রহর গুনছে এখন রাজ্যবাসী।
হিরনময় রায়(তেলিয়ামুড়া)