গৌতম পাল(রায়গঞ্জ) বোধনের দিন মায়ের ঘরে প্রবেশ করবে উমা। তার আগে কৃষ্ণ প্রবেশ করলো তার মায়ের ঘরে। চার বছর পর পুজোর সময় হারিয়ে যাওয়া ছেলেকে খুঁজে পেয়ে আনন্দে বাকরুদ্ধ কার্শিয়ং এর বল পরিবার। বৃহস্পতিবার উত্তর দিনাজপুর জেলার রায়গঞ্জ কর্নজোড়ায় সূর্যোদয় মুক ও বধির হোম থেকে মুক ও বধির পুত্র সন্তান কৃষ্ণ বলকে কার্শিয়াংএ বাড়িতে নিয়ে গেলেন বল দম্পতী। চার বছর পর বাবা মায়ের সাথে মিলনের দৃশ্যে অশ্রুসজল হয়ে পরে উপস্থিত সকলের।
বাসের পেছনে সিঁড়িতে ঝুলতে ঝুলতে একদিন কার্শিয়াংএর বাজার থেকে শিলিগুড়িতে চলে আসে কথা বলতে না পাড়া ও কানেও শুনতে না পাওয়া মূক ও বধির ছেলে কৃষ্ণ বল। তারপর শিলিগুড়ি থেকে ওভাবেই বাসের পেছনে ঝুলেই চলে আসে উত্তর দিনাজপুর জেলার করনদিঘী থানার টুঙিদিঘীতে। সেটা ছিল ২০১৪ সাল। টুঙিদিঘীতে উদ্যেশ্যহীনভাবে কৃষ্ণকে ঘোরাফেরা করতে দেখে স্থানীয় বাসিন্দারা করনদিঘী থানার পুলিশের হাতে তুলে দেয়। কৃষ্ণ মূক ও বধির হওয়ায় তার নাম ঠিকানা কিছুই বলতে পারেনি। ২০১৪ সালের ৪ জুলাই করনদিঘী থানার পুলিশ তাকে চাইল্ড ওয়েলফেয়ার কমিটির হাতে তুলে দিয়েছিল। সেই থেকে কৃষ্ণ রায়গঞ্জ কর্নজোড়ায় সূর্যোদয় মুক ও বধির হোমেই দিন কাটাচ্ছিল। এদিকে ছেলে কৃষ্ণকে খুঁজে না পেয়ে তার বাবা ইরান বল কার্শিয়াং থানায় একটি নিখোঁজের ডায়েরি করেছিলেন। পুলিশ তদন্ত করতে গিয়ে রাজ্যের বিভিন্ন হোমগুলিতে খোঁজ খবর নেওয়া শুরু করে। কৃষ্ণের হদিশ করতে পারেনি পুলিশ। এরপর আচমকাই উত্তর দিনাজপুর জেলা চাইল্ড ওয়েলফেয়ার কমিটি কৃষ্ণ বলের উদ্ধারের তথ্য দেয়। সেই তথ্য হাতে পাওয়ার পর কার্শিয়াং জেলা পুলিশ উত্তর দিনাজপুর জেলা চাইল্ড ওয়েলফেয়ার কমিটির সাথে যোগাযোগ করে। তদন্তকারী পুলিশ অফিসার কৃষ্ণের বাবা ইরান বল ও মা প্রমিতা বলকে সাথে নিয়ে চলে আসে রায়গঞ্জ কর্নজোড়ায় সূর্যোদয় হোমে। সমস্ত সরকারি তথ্য প্রমান জমা করে। এরপর সকলের মাঝখান থেকে কৃষ্ণকে নিজেদের পুত্র সন্তান বলে চিহ্নিত করেন তারা। চার বছর পরে বাবা মাকে পেয়ে আনন্দে আত্মহারা হয়ে ওঠে কৃষ্ণ। চার বছর ধরে যে মনকষ্ট পেয়েছে আজ তার অবসান হলো, তাই হারানো রত্নকে ফিরে পেয়ে বাকরুদ্ধ হয়ে পরলেন বল দম্পতী।