ঘরে প্রবেশ নয়, বোধনে মায়ের ঘর থেকে বিদায় নিলো পায়েল

স্টাফ রিপোর্টার(আগরতলা) মেয়েটির অপরাধ ছিলো সে একটি ছেলেকে ভালোবাসত । কিন্তু তাদের এই ভালোবাসাকে মেনে নেয়নি মেয়েটির পরিবার। চতুর্থীর সন্ধ্যায় ছেলেটির সাথে ড্রেস কিনতে যাওয়ার অপরাধে সিটি সেন্টারের সামনেই মেয়েকে মারধোর করে তার বাবা। বাড়িতে নিয়ে আসার পরেও চলে মেয়েটির উপর অত্যাচার,অশ্লীল ভাষায় গালিগালাজ। বাবা-মায়ের অত্যাচারের ফলে অজ্ঞান হয়ে পড়ে মেয়েটি। রাতেই ভর্তি করা হয় জিবি হাসপাতালে। যদিও শেষ রক্ষা হয়নি। দেবীর বোধনের দিনই সব শেষ। যেদিন মেয়ের প্রবেশ করার কথা মায়ের বাড়িতে সেদিনেই মা-বাবাকে ছেড়ে এই পৃথিবী থেকে বিদায় নিলেন পায়েল চৌধুরী । মর্মান্তিক এই ঘটনাটি ঘটেছে রাজধানী আগরতলার ৭৯ টিলা জ্যোতিময় কলোনিতে । এই ঘটনায় অভিযোগের তির পায়েলের বাবা বাদল চৌধুরী ও তার মায়ের বিরুদ্ধে। ঘটনার বিবরনে জানা গেছে, ক্লাস নাইনের ছাত্রী পায়েল চৌধুরীর সঙ্গে যোগেন্দ্রনগর মহাশক্তি এলাকা বাসিন্দা সুব্রত দেবনাথের ২ বছর ধরে প্রেমের সম্পর্ক ছিলো। তাদের এই সম্পর্কের কথা জানত দুই পরিবারের লোকেরা। ছেলের পরিবারের থেকে এই বিষয়ে কোন আপত্তি না থাকলেও মেয়ের পরিবারের এই সম্পর্কে প্রথম থেকেই আপত্তি তুলেছিলো। মেয়ে যাতে ওই ছেলের সঙ্গে কোন সম্পর্ক না রাখে সেই জন্য বাড়ি থেকে চাপ দেওয়া হতো পায়েলকে। পাশাপাশি মারধোর,অত্যাচার করা হতো তার উপর। চতুর্থীর দিন একপ্রকার বাধ্য হয়ে ওই ছেলের বাড়িতে যায় পায়েল। এবং তাকে বিয়ে করার কথা জানায়। কিন্তু সুব্রত দেবনাথের বাবা-মা স্পষ্ট জানিয়ে দেয় যেহেতু তার বয়স ১৮ হয়নি তাই এখন বিয়ে দেওয়া সম্ভব নয়, ১৮ বছর হলে ঠিক তাদের দুজনের বিয়ে দেওয়া হবে । এরপর সন্ধ্যায় সুব্রত এর সঙ্গে সিটি সেন্টারে পুজোর শপিং করতে আসে পায়েল। সেই সময় তাদের দেখতে পেয়ে একজন মেয়ের বাবাকে ফোন করে বিষয়টি জানায়। খবর পেয়ে সঙ্গে সঙ্গে সিটি সেন্টারের সামনে এসে পায়েলের বাবা পায়েলকে খুব মারধোর করে বলে অভিযোগ। এরপর বাড়িতে নিয়ে গিয়েও তার উপর অত্যাচার করে তার বাবা-মা। মারের চোটে রাতেই অজ্ঞান হয়ে পড়ে পায়েল। নিয়ে আসা হয় জিবি হাসপাতালে। কিন্তু আজ সকালেই সব শেষ। কিন্তু এরপরেই ঘটনা অন্যদিকে মোড় নেয়। মেয়ের মৃত্যুর জন্য সুব্রতকে দায়ী করে তার নামে পূর্ব মহিলা থানায় এফআইআর করে পায়েলের পরিবার। অভিযোগ পাওয়ার পরেই  সুব্রত দেবনাথকে ডেকে পাঠায় পুলিশ। পুলিশের পক্ষ থেকে তাকে বলা হয় যে, একটু থানায় দেখা করতে আসতে হবে। সে থানায় আসার পরেই তাকে গ্রেফতার করে পুলিশ। তার বিরুদ্ধে IPC306(M) ধারা ও ২০১২ পস্কো আইনে মামলা দায়ের করা হয়েছে। কিন্তু এলাকায় যথেষ্ট ভালো ছেলে বলেই পরিচিত সুব্রত। এমনটাই জানিয়েছেন তার প্রতিবেশীরা। অপর দিকে পায়েলের প্রতিবেশীরা জানিয়েছেন প্রতিদিন তার বাবা-মা মেয়ের উপর অত্যাচার করত। দিন দিন অত্যাচারের মাত্রা ক্রমশ বাড়ছিলো। এই ঘটনার পর মেয়ের পরিবারের বিরুদ্ধেই অভিযোগের আঙ্গুল তুলেছে এলাকাবাসী। পুরো ঘটনার নিন্দা জানিয়েছেন তারা।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here