কুকুর ছানাকে গাড়িতে পিষে দেওয়ার পর চূড়ান্ত অমানবিকতা পুলিশ ও তার গাড়ি চালক

হক জাফর ইমাম(মালদা) মালদা শহরের প্রশাসনিক ভবনের কাছে অমানবিক দৃশ্যের সাক্ষী হয়ে রইলেন মালদাবাসি । শনিবার বেলা বারোটা সরকারি দপ্তর বন্ধ থাকলেও খোলা ছিল আদালত ও পুলিশ দপ্তর৷ সেখানে হাজির হতে আসছিলেন পুলিশ প্রশাসনের কর্তারা৷ হঠাৎ গেল গেল রব৷ এক পুলিশ অফিসারের গাড়িতে চাপা পড়েছে কয়েকদিনের একটি কুকুরের বাচ্চা৷ সবার আওয়াজে পেছোল গাড়ি৷ রক্তাক্ত কুকুরের বাচ্চাটি কোনোরকমে সেখান থেকে খানিকটা দূরে ছিটকে এল৷ মুখ দিয়ে টপটপ করে পড়ছে রক্ত৷ সন্তান স্নেহে ছুটে এল তার মা৷ মা’কে দেখে বাচ্চাটির আর্তনাদ যেন ভারী করে দিল সেখানকার বাতাস৷ প্রবল যন্ত্রণায় আর্তনাদ করতে করতেই এদিক ওদিক গড়াতে থাকে বাচ্চাটি৷ সন্তানকে আগলে মা’ও কাঁদতে থাকে অঝোরে৷ সেখানে থাকা সকলে ব্যস্ত হয়ে পড়ে৷ বাচ্চাটিকে জল দেওয়া হয়৷ মা-সন্তানের কান্নায় বিচলিত এক সংবাদকর্মী খবর দেন জন্তু জানোয়ারদের নিয়ে কাজ করা একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থায়৷ কিছুক্ষণের মধ্যেই সেখানে চলে আসেন ওই সংস্থার এক প্রতিনিধি৷ প্রাথমিক চিকিৎসা করেন কুকুরছানাটির৷ ততক্ষণে অবশ্যে ওই এলাকায় গাড়ির ধুলো উড়িয়ে চলে গিয়েছেন পুলিশ অফিসার৷ রাস্তার কুকুরছানার দিকে তাকানোর সময় কোথায় তাঁর!
কলকাতার নীলরতন সরকার মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে কুকুরের বাচ্চার নিধন যজ্ঞে বিচলিত মানুষ মালদার মতো মফফ্‌সল শহরেও মোমবাতির নীরব প্রতিবাদ করেন৷ কিন্তু যাঁদের হাতে সমাজ রক্ষার ভার, তাঁদেরই এক প্রতিনিধি কীভাবে নিজের গাড়ির তলায় চাপা পড়া কুকুরছানাটিকে পশু হাসপাতালে নিয়ে গেলেন না তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন এনিম্যাল ফর এইড নামে ওই স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার প্রতিনিধি সুভাষ আগরওয়াল৷ প্রাথমিক চিকিৎসার পর তিনি বলেন, আপাতত যন্ত্রণা থেকে খানিকটা শান্তি পেয়েছে দুর্ঘটনাগ্রস্ত কুকুরছানাটি৷ তাকে ওষুধ দেওয়া হয়েছে৷ দুর্ঘটনায় তার একটি পায়ে প্রবল আঘাত রয়েছে৷ সেই পা ফুলে গিয়েছে৷ ফেটে গিয়েছে ছানাটির মাড়ি, ভেঙে গিয়েছে দাঁত৷ এখন তাঁদের চিকিৎসক নেই৷ বিকেলে তিনি চিকিৎসক নিয়ে এসে ফের কুকুরছানাটির চিকিৎসা করাবেন৷ সুভাষবাবু জানান, যে মুহূর্তে তিনি কুকুরছানাটিকে কোলে নিয়েছিলেন, সেই মুহূর্তে তার মায়ের মুখে যেন স্বস্তির ছবি ফুটে ওঠে৷ নীরবে সে তাঁর কাছে আর্তি জানায়, যেন তার সন্তান সুস্থ হয়ে ওঠে৷ ঘটনাস্থলে প্রত্যক্ষদর্শী ফিরোজ হক ঘটনা সম্পর্কে সংবাদমাধ্যমকে বলেন ছোট শিশু কুকুরের বাচ্চা টিকে পুলিশের গাড়িতে চাপা দেয় তার পরে গাড়িতে থাকা পুলিশের উচিত ছিল এক্সিডেন্ট হওয়া শিশু কুকুরের বাচ্চা টিকে পশু হাসপাতালে নিয়ে গিয়ে ট্রিটমেন্ট করা, এটি একটি অমানবিক ঘটনা অন্তত গাড়ি থেকে নেমে দেখাটাও উচিত ছিল গাড়িতে বসে থাকা ড্রাইভার থেকে পুলিশের।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here