হাইকোর্টের ঝক্কি মিটে মুখ্যমন্ত্রী’র পূজা অনুদানের চেক পেয়ে খুশির অন্ত নেই হাওড়া গ্রামীণ এলাকায়।

কল্যাণ অধিকারী(হাওড়া)  দুর্গাপূজা অনুদান নিয়ে বুধবার আশানুরুপ ফলাফল হতেই বৃহস্পতিবার হাওড়া জেলার একাধিক পূজা কমিটিকে থানায় ডেকে হাওড়া ট্রেজারি-১ পশ্চিমবঙ্গ সরকার লেখা ১০ হাজার টাকার চেক তুলে দেওয়া হল। চেক হাতে পেয়ে খুশির অন্ত নেই পূজা কমিটির কর্মী কর্তাদের মধ্যে।

মাসখানেক আগে নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে দুর্গাপূজা কমিটির সঙ্গে  বৈঠকে বসেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় । ওই বৈঠক থেকে রাজ্যের ২৮ হাজার পুজো কমিটিকে ১০ হাজার টাকা করে অনুদান দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছিলেন। খুশি হয়েছিল পূজা কমিটির কর্মী-কর্তারা । শুরু হয় চেক প্রস্তুত করবার তোড়জোড় । এর মধ্যেই দুর্গাপুরের বাসিন্দা সৌরভ দত্ত এবং আইনজীবী দ্যুতিমান ব্যানার্জি এই দুইয়ে মিলে হাইকোর্টে একটি জনস্বার্থ মামলা দায়ের করেন। অভিযোগে বলা হয়, একটি বিশেষ সম্প্রদায়ের অনুষ্ঠানে এভাবে টাকা দেওয়া যায় না । শুরু হয় মামলা মোকদ্দমা ইত্যাদি।

বুধবার ওই মামলায় হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি দেবাশিস করগুপ্ত এবং বিচারপতি শম্পা সরকারের ডিভিশন বেঞ্চ জানিয়ে দেয় পুজোর অনুদান সংক্রান্ত ব্যাপারে নাক গলাবে না। তবে কানাঘুষো ছিল এখানেই ওই মামলা ইতি টেনে দেওয়া হবে না। এই রায়ের বিরুদ্ধে দেশের সর্বোচ্চ আদালতে চ্যালেঞ্জ জানানো হতে পারে আবেদনকারীরা। সেইমত প্রায় আপতকালিন ভাবে তৈরি করা হয় চেক । পাঠিয়ে দেওয়া হয় বিভিন্ন জেলায়। থানা থেকে ফোন করে ডেকে পাঠানো হয় পূজা কমিটির সভাপতি দের । তুলে দেওয়া হয় ১০ হাজার টাকার চেক । প্রশ্বস্তির হাসি মুখে, সঙ্গে হাতে চেক নিয়ে ফিরে যান মন্ডপে।

এ দিন বেলার দিকে ফোন আসে চুড়ামণি ঘোষ-এর মোবাইলে। ১০ হাজার টাকার চেক নিয়ে যেতে ডেকে পাঠানো হয় আমতা থানায়। কিছুটা কাতুকুতু মুখে খুশির খবর দেন সকলকে। চুড়ামণি ঘোষ হাওড়া আমতা দশ নং পুল যুবগোষ্ঠী দূর্গাপুজা কমিটির সভাপতি। তিনি জানান, কোষাধক্ষ ঈশ্বর মালিক ও সম্পাদক অমিত পাল কে নিয়ে থানায় চলে আসি। আমাদের হাতে তুলে দেওয়া হয় ১০ হাজার টাকার চেক। খুশির সীমা ছাড়িয়ে যায়। এত বছর পূজা করছি প্রথম বার সরকারি সাহায্য পেলাম। এই সময় দুর্গাপূজা করাটা অতন্ত্য ব্যয়বহুল। সেখানে ১০ হাজার টাকা সরকারি সাহায্য মেলাটা অনেকটা স্বস্তির। সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের পাশাপাশি সেফ লাইফ সেভ ড্রাইভ এর প্রচারে সাহায্য দেবে ওই টাকা। তবে মামলা দায়ের হতে নিরাশ হয়ে পরেছিলাম চেক পেয়ে খুশি।

গ্রামীণ এলাকার আরও বেশ কিছু পূজা কমিটিকে সরকারি অনুদানের চেক দেওয়া হয়েছে বলে জানা গেছে। তবে প্রশ্ন একটা থেকে গিয়েছে। এরপরে যদি সুপ্রিম কোর্টে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে মামলা হয় সেক্ষেত্রে কি হবে? এতকিছু ভাবতে রাজি নয় পূজা কমিটি। মন্দার বাজারে সরকারি ১০ হাজার টাকা অনুদান মেলাটা অনেকটা স্বস্তি দিয়েছে। মামলা নিয়ে মাথা না ঘামিয়ে মাথার উপর তিতলি ভড় করছে ওটাকে উতরে যাওয়াটা এখন চিন্তার বিষয়।

error: Content is protected !!