লোকমুখে শুনে ভাল ফল পাওয়ার আশায় অনেকেই আমরা হনুমানজির পুজো করে থাকি। কিন্তু মনের মতো ফল পাই কজনই বা বলুন! কিন্তু কেন এমনটা হয় জানা আছে?
শাস্ত্র মতে হনুমান জির বিশেষ কিছু অবতারের পুজো করলে তবেই কাঙ্খিত ফল মেলে। তাই তো কোন কোন রূপের পুজো করা উচিত, তা না জেনে মারুথির পুজো করলে শুধু সময় নষ্ট হয়। কারণ এক্ষেত্রে কোনও ফলই পাওয়াই যায় না। তাই তো এই প্রবন্ধে শ্রী হনুমানের সেই সব রূপের বিষয়ে আলোচনা করা হল, যাদের পুজো করলে মনের সব ইচ্ছা পূরণ তো হয়ই, সেই সঙ্গে মনের মতো চাকরি এবং জীবনসঙ্গী পেতেও সময় লাগে না। মেলে আরও অনেক উপকার।
তাহলে আর অপেক্ষা কেন! চলুন জেনে নেওয়া যাক হনুমান জির কোন ধরনের ছবি বাড়িতে এনে রাখা উচিত এবং পুজো করা উচিত, সে সম্পর্কে!
১. রামেরদোসরযেখানে : যে ছবি বা মূর্তিতে দেখা যাচ্ছে হনুমান জি, শ্রী রাম এবং সীতা মাকে প্রণাম করছেন, তেমন ছবি বাড়িতে এনে পুজো শুরু করলে খারাপ সময় কেটে যেতে শুরু করে। ফলে একের পর এক বাঁধা সরে গিয়ে জীবন আনন্দ এবং খুশিতে ভরে ওঠে। প্রসঙ্গত, গৃহস্থের অন্দরে সুখ-শান্তি বজায় থাকুক, এমনটা যদি চান, তাহলেও হনুমান জির এই রূপের পুজো শুরু করতে পারেন। দেখবেন সুখ-সমৃদ্ধি আপনার রোজের সঙ্গী হবে।
২. সাদামূর্তি : শাস্ত্র মতে হনুমান জির সাদা মার্বেলের মূর্তি বাড়িতে এনে পুজো শুরু করলে মনের মতো চাকরি পাওয়া যায়। সেই সঙ্গে কর্মক্ষেত্রে পদন্নতি এবং মাইনে বাড়ার সম্ভাবনাও বৃদ্ধি পায়। প্রসঙ্গত, যে ছবিতে হনুমানজির পিছনে সাদা দেওয়াল রয়েছে এবং শ্রী হনুমান লাল রঙের বস্ত্রে শোভিত, এমন ছবির পুজো করলেও সমান উপকার মলে। তাই যদি কর্মক্ষেত্রে চটজলদি সাফল্য যদি পেতে চান, তাহলে হনুমান জির এমন ছবি বা মূর্তির পুজো শুরু করতে দেরি করবেন না যেন!
৩. ছবিবামূর্তিরাখতেহবেপুজোরঘরে : হনুমান জি যেহেতু ব্রহ্মচারী ছিলেন, তাই স্বামী-স্ত্রী যে ঘরে শোন, সেখানে মারুথির ছবি রাখা একেবারেই উচিত নয়। কারণ এমনটা করলে ভাল হওয়ার থেকে খারাপ হওয়ার আশঙ্কা যায় বেড়ে। তাই পরিবারের কারও সঙ্গে কোনও খারাপ ঘটনা ঘটুক এমনটা যদি না চান, তাহলে ভুলেও এই ভুল কাজটি করবেন না যেন!
৪. ধ্যানরতহনুমান : হিন্দু শাস্ত্রের উপর লেখা বেশ কিছু বই অনুসারে ধ্যানরত হনুমান জির মূর্তি বা ছবি ঠাকুর ঘরে রাখা বেজায় শুভ। কারণ এমনটা করলে গৃহস্থের অন্দরে শুভ শক্তির প্রভাব বাড়তে শুরু করে। ফলে স্বাভাবিকভাবেই হারিয়ে যাওয়া সুখ-শান্তি ফিরে তো আসেই। সেই সঙ্গে চুরান্ত সফলতার স্বাদ পেতেও সময় লাগে না। এখানেই শেষ নয়, এমনটা বিশ্বাস করা হয় যে হনুমান জির এমন অবতারের ছবি বাড়িতে রাখলে যে কোনও পরিস্থিতিতে সঠিক সিদ্ধান্ত গ্রহণের সম্ভাবনা যায় বেড়ে।
৫. শ্রীরামেরপুজোকরছেনতারভক্ত : এই ধরনের ছবি ঠাকুর ঘরে জায়গা করে নিলে আমাদের মনের অন্দরে লুকিয়ে থাকা ভয় কমতে শুরু করে। ফলে আত্মবিশ্বাস এতটা বেড়ে যায় যে জীবনে চলার পথে আসা যে কোনও বাঁধা পেরতে সময় লাগে না। সেই সঙ্গে স্ট্রেস লেভেলও কমতে শুরু করে। ফলে নানাবিধ রোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনাও যায় কমে।
৬. মনোবলবাড়াতে : এমনটা বিশ্বাস করা হয় য়ে গদাধারি হনুমানের ছবি বাড়িতে এনে রাখলে মনের জোড় বাড়তে শুরু করে। ফলে কর্মক্ষেত্রে সফলতা লাভের সম্ভাবনা যেমন বাড়ে, তেমনি কঠিন পরিস্থিতিতে সঠিক সিদ্ধান্ত নেয়ার ক্ষমতাও বাড়তে শুরু করে। প্রসঙ্গত, কথায় বলে মনবল হল সেই শক্তি, যা কঠিন থেকে কঠিনতর স্বপ্নকে বাস্তবায়িত করতে পারে। তাই একবার যদি অকুতভয় হয়ে উঠতে পারেন, তাহলে পুরো দুনিয়া আপনার।
৭. সূর্যদেবতারআরাধনায় : সুস্থ শরীর, সেই সঙ্গে পকেট ভর্তি টাকা, এই দুই স্বপ্নকে যদি বাস্তবায়িত করতে হয়, তাহলে নিয়মিত মারুথির পুজো করতে হবে। তবে যে কোনও মূর্তির পুজো করলে কিন্তু চলবে না। এক্ষেত্রে হনুমান জি সূর্য দেবের আরাধনা করছেন, এমন ছবি বা মূর্তির পুজো করতে হবে। এমনটা করলে বড়লোক হয়ে ওঠার স্বপ্ন পূরণ তো হয়ই। সেই সঙ্গে আয়ুও বৃদ্ধি পাবে চোখে পরার মতো।
৮. উত্তরমুখিদেবেরমুখ : এমনটা বিশ্বাস করা হয়, যে ছবিতে হনুমান জির মুখ উত্তর দিকে রয়েছে, তেমনি ছবি বাড়িতে এনে রাখা বেজায় শুভ লক্ষণ। কারণ এমন অবতারের পুজো করলে প্রতিটি দেব-দেবীর আশীর্বাদ পাওয়া যায়। ফলে জীবনে সুখে-শান্তিতে ভরে ওঠে। সেই সঙ্গে অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি লাভের পথও প্রশস্ত হয়।