ওরা কুসংস্কারে চাপা,নারী কিন্তু আজও প্রতিবাদী

মানসী বিশ্বাস: একটা লাঠিকে ভাঙা সহজ, অনেক থাকলে কখনোই তা সম্ভব হয় না।ঠিক তেমনই সর্বদা একত্রে লড়াই সংগ্রামে অংশ নেওয়া প্রয়োজন। অনেক স্যালুট শাজিলা কে, কেরলের কৈরালি টিভির চিত্র সাংবাদিক শাজিলা আবদুল রহমান কে,সত্যিই হ্যাটস অফ।বুঝিয়ে দিয়েছে নারীরা কম নয়, কম নয় শরীরে, মানসে,এমনকি রণক্ষেত্রে অবতীর্ণ হতেও! হুমকি দিয়েও থামানো যায়নি তাকে,শারীরিক নিগ্রহের খবর শোনাতেও ভাঙেনি সে মেয়ে।কাঁধ থেকে নামায়নি ক্যামেরা। চোখের জল মুছে আবার ক্যামেরার পর্দায় চোখ রেখে প্রতিবাদীত্বকে জানিয়েছে সে।নারীর সম্মানার্থে নিজের কর্তব্যকে পালন করেছে শেষ পর্যন্ত।
সাংবাদিকরা তো সমাজের বন্ধু, তাই খবরাখবর উঠে আসে।তবে শাজিলা যা করেছেন তার জন্য হিন্দুত্ববাদীরা পিছু হটেছে, আর নারীরা পাবে প্রাপ্য সম্মান। তাই তার কাঁধ থেকে ক্যামেরা নামেনি।চোখে জল গড়িয়েছে —ভয় নয় অপমানে।যা নিজেই তিনি স্বীকার করেছেন।

হ্যাঁ তোমরা পুরুষ, আর ওরা নারী। তবে এই নারীর মাতৃজঠরে দশ মাস দশ দিন স্থান প্রাপ্ত করে আলো দেখ এ কথা বোধ হয় ভুলে যাও মাঝেমাঝেই !একদল শুধু মনে রাখে নারীর প্রবেশ নিষেধ আর কাদের প্রবেশাধিকার!! এদেরকে শুধুই ধিক্কার। আর নয়তো তোমরাই মাতৃগর্ভকে অচ্ছুত আখ্যা দাও..।

রজস্বলা মা রাঁধে, তার হাতের খাবার হয়না অচ্ছুত বরং লাগে অমৃত। সেই মা কোলে শুইয়ে বুকের দুধ দিলে তখন মা কেন তোমরাও অচ্ছুত হওনা? আরে এমন বাধ্যবাধকতা কেন?
১০ থেকে ৫০ বছর বয়স পর্যন্ত মহিলাদের প্রবেশ নিষেধ এ আজ্ঞা যারা দিচ্ছেন তারা কি এটুকু বোঝেন যে ১০ এর নিচে যারা তারা নাবালক ফলত তাদের একা প্রবেশ অসম্ভব আর ৫০ এর উর্ধ্বে যারা তাদের গায়ের ক্ষমতাই বা থাকে কত টুকু!এদের দেওয়া হয় প্রবেশের ছাড়পত্র!

রেচন ক্ষরণ অচ্ছুত হয় না,শুধু রক্তের নিয়মিত চক্রের শারীরবৃত্তীয় প্রক্রিয়াকে অচ্ছুত আখ্যা দেওয়া —এ কিসের ঘটনা? এ কিসের অচ্ছুততা বোধ? তবে অম্বুবাচিতে আসামের কামাক্ষ্যায় কেন ঘটে ভক্ত সমাগম? কী প্রয়োজন পড়ে ওই একটুকরো লাল কাপড়ের?

বীর্যক্ষরণের ছুঁতাছুঁত নেই— রক্ত ক্ষরনেই সব? আশ্চর্য! বোঝে কী, নিজের মাকেই অপমান করে এরা? ভগবানকেও তো অপমান করে তবে নিশ্চয়? এত যে নিষ্ঠা, ভালবাসা.. ভগবানের উপর দেখায়…তবে দূর্গা কালীকেও তোমরা অচ্ছুত বলবে?

সুপ্রিম কোর্ট সংস্কার দেখালেও মনের মধ্যে আঁধারে যে কুসংস্কার জনমানসে লুকিয়ে আছে তা পরিস্রুত না হলে সুপ্রিম কোর্টের রায়ও বুঝি ফেলনা দাঁড়ায়! হ্যাঁ, সবশেষে একটাই…কুসংস্কার নয় সংস্কার প্রয়োজন।।

error: Content is protected !!