একটি দুর্ঘটনা অসহায় করে দিলো পুরো পরিবারকে

মৃত যুবক কমলাকান্ত সিংহ

সৌমাল্য ব্যানার্জি(পূর্ব মেদিনীপুর) কমলাকান্ত সিংহ  রং  এর কাজ  করতো কলকাতার বিভিন্ন জায়গায় । দুর্ঘটনার দিন বিকালে শেষ কথা হয়েছিলো স্ত্রী মিতা সিংহের সঙ্গে। তার কিছুক্ষন পরেই ঘটে গেলো সেই মর্মান্তিক দুর্ঘটনা।

মঙ্গলবার সন্ধ্যের কিছু পরে সাঁতরাগাছি স্টেশনে ২ ও ৩ নম্বর প্লাটফর্মের মাঝে দুর্ঘটনা টি ঘটে। ওই সময় আপ ও ডাউন লাইনে দুটি লোকাল ট্রেন এসে যায় এবং একটি এক্সপ্রেস ট্রেন দক্ষিণ থেকে এসে যাত্রী নামায়। বহু যাত্রী নেমে ফুটব্রিজে সেই সময় ওঠে। কাল লক্ষ্মী পুজোর ছুটি থাকায় বাড়ি ফিরবার তাড়া ছিল সকলের। ট্রেন ধরতে হুড়োহুড়ি শুরু হয়ে যায়। তারপর সেই ভয়াবহ ঘটনা। এই ঘটনায় আহত অবস্থায় বেশ কয়েকজনকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছিলো। ২ জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ার হাসপাতালে মৃত্যু হয় তাঁদের। মৃতদের মধ্যে একজন হলেন কমলাকান্ত সিংহ।

                                                 মৃত যুবকের স্ত্রী ও মেয়ে 

তাঁর স্ত্রী জানিয়েছেন শেষবার যখন কমলাকান্তের সঙ্গে কথা হয়েছিলো সেই সময় সে তাঁকে জানিয়েছিলো বাসে করে সাঁতরাগাছি আসছি। তারপর সেখান থেকে ট্রেন ধরে বাড়ি ফিরবো। কিন্তু আর বাড়ি ফেরা হলোনা। একটি দুর্ঘটনা কেঁড়ে নিলো সব কিছু। টিভিতে এই ঘটনা দেখার পর উদগ্রীব হয়ে পড়েছিলেন তাঁর স্ত্রী। বার বার ফোন করছিলেন কমলাকান্তকে। রাত ৮টার সময় বাবাকে ফোন করেছিলেন মেয়ে পৌলমী। কিন্তু মেয়ের ফোন আর ধরতে পারেনি বাবা। পরে এক ব্যাক্তি জানায় দুর্ঘটনায় গুরুতর অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি আছেন। এরপর হঠাৎ করেই খবর পান যে হাসপাতালেই মৃত্যু হয়েছে তাঁর। স্বামীর মৃত্যুর খবর শুনেই মাথায় বাজ ভেঙ্গে পড়ে স্ত্রীর। স্ত্রী আর মেয়েকে নিয়েই সংসার ছিলো কমলাকান্তের। কলকাতায় দৈনিক ৪০০ টাকা রোজে রঙের কাজ করতেন। সেই দিয়ে চলতো সংসার। কিন্তু আজ সব শেষ। স্ত্রী হারিয়েছেন তাঁর স্বামীকে আর মেয়ে হারিয়েছে তাঁর বাবাকে।   পরিবাররের একমাত্র উপার্জনকারীর মৃত্যু হওয়ায় এখন অসহায় হয়ে পড়েছে তাঁর পরিবার। মেয়ে ক্লাস এইটে পড়ে। তাঁর পড়াশুনার খরচ থেকে শুরু করে সংসার খরচ সব কিছু নিয়েই এখন রীতিমত দুশ্চিন্তায় কমলাকান্তের পরিবার। তাঁর স্ত্রীর দাবী রেল বা রাজ্য সরকার যদি চাকরী দিয়ে পরিবারের পাশে দাঁড়ায় তাহলে সংসার ও মেয়ের পড়াশোনা চালাতে সক্ষম হবেন তিনি। এখন এটাই দেখার যে রাজ্য সরকার বা রেল তাঁদের পরিবারের পাশে দাঁড়ায় কিনা।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here